সম্প্রতি শিশু–কিশোরদের গ্রেফতার ও নির্বিচারে আটক রাখার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং শিশু আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের দাবী জানাচ্ছে ৩০ টি সংস্থার সমন্বয়ে গ� িত শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিরসনে কোয়ালিশন । উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত “গারদখানায় নবম দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীও”[2] এবং “আট দিন নিখোঁজ, দ্বারে দ্বারে স্বজনরা”[3] সংবাদ শিরোনাম হতে জানা যায় যে, শিশু-কিশোরদের গ্রেফতার ও নির্বিচারে আটক রাখার ঘটনা ঘটছে যা সংবিধান, বিদ্যমান আইন ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লংঘন।
বর্ণিত ঘটনাসমূহ মানবাধিকার, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ সমূহ যথাক্রমে ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা) এবং ৩১ অনুচ্ছেদ; (আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে যে কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্� ুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সমূহের অধীনে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ক ২০১৬ সালের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। একইসাথে, শিশু আইন ২০১৩ এর ৭০ ধারা অনুযায়ী শিশুদের প্রতি শারীরিক ও মানসিক আচরন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গত ১৩ই জানুয়ারি ২০১১ তারিখ মানবাধিকার সংগ� ন ব্লাস্ট এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দায়ের করা রিট এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত যুগান্তকারী রায় ৯ আগস্ট ২০১০ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্� ানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি রহিত করার বিষয়ে জারীকৃত পরিপত্র এবং ২১ শে এপ্রিল ২০১১ তারিখে সরকার কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্� ানে ছাত্র ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি রহিত কর্তৃক জারীকৃত নীতিমালা ২০১১ অনুযায়ী শিশুদের প্রতি যেকোন ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি প্রদান বেআইনি। এছাড়া শিশু অধিকার সনদের অনুচ্ছেদ-২০ এ বলা হয়েছে, “কোনো শিশু সাময়িক কিংবা স্থায়ীভাবে তার পারিবারিক পরিবেশের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে কিংবা সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনায় ঐ পরিবেশে তাকে রাখা সমীচীন না হলে সে রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে”।
এমতাবস্থায়, উল্লেখিত ঘটনাবলী জরুরী তদন্তপূর্বক গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের নির্দেশনা এবং আইনের সংস্পর্শে আসা প্রত্যেক শিশুর প্রতি শিশু আইন ২০১৩, মতে আচরণ করার জোর দাবী জানাচ্ছে শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিরসনে কোয়ালিশন।
বার্তা প্রেরক:
শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিরসনে কোয়ালিশন সচিবালয়ের পক্ষে
কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
ই-মেইল: communication@cakhuy.com
[1] শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিরসনে কোয়ালিশনঃ পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্� ান, জনসমাগমের স্থান সহ সর্বক্ষেত্রে শিশুদের প্রতি শারীরিক ও মানসিক শান্তি বন্ধে বিদ্যমান আইন, হাইকোর্টের নির্দেশনা, বিভিন্ন সরকারী পরিপত্র ও আদেশ বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও শিশু অধিকার প্রতিষ্� ায় নিয়োজিত বেসরকারী সংস্থা, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, অভিভাবক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে ২০১৭ সালে শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক শান্তি নিরসনে ৩০ টি সংস্থার সমন্বয়ে কোয়ালিশন গ� িত হয়। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এই কোয়ালিশনের সচিবালয়ের দায়িত্ব পালন করছে।
[2] গারদখানায় নবম দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীও (দৈনিক সমকাল, ২৬ জুলাই ২০২৪; পৃষ্� াঃ ১১; কলামঃ ১)
[3] আট দিন নিখোঁজ, দ্বারে দ্বারে স্বজনরা (দৈনিক সমকাল, ২৯ জুলাই ২০২৪; পৃষ্� াঃ ১১; কলামঃ ৫)