প্রেস বিজ্ঞপ্তি

২০ অগাস্ট ২০২৪ ইং

বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ড প্রদানের ঘটনায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে এর দাবী জানাচ্ছে ব্লাস্ট 

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মামলায় বিশেষ করে নারীদের গ্রেফতার ও রিমান্ড প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবী জানাচ্ছে ব্লাস্ট। দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ হতে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন পরবর্তী সময় বিভিন্ন মামলায় নারীদের গ্রেফতার ও রিমান্ড প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মানছেন না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা), ৩১ (আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার), ৩২ (জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার-রক্ষণ), ৩৩ (গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ) এবং ৩৫ (বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ) সমূহের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একইসাথে, বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও অভিযুক্তকে রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ম্যাজিষ্ট্রেট ও বিচারকদের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা সম্বলিত সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের যুগান্তকারী রায়ের সাথে  সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। এ নির্দেশনা সমূহের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা সমূহ হলোঃ

  • কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে গ্রেপ্তারের বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব কিন্তু অনধিক ১২ ঘন্টার মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
  • ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে রিমান্ড বা হেফাজতে নিতে হলে কিংবা বিচারিক হেফাজত তথা কারাগারে প্রেরণ করতে হলে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা দায়ের করা আবশ্যক।
  • কাউকে গ্রেপ্তার করার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে।
  • যাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তিনি অথবা গ্রেপ্তারের স্থানে যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন তাঁরা দেখতে চাইলে, গ্রেপ্তারকারী কর্মকর্তাকে অবশ্যই তাঁর পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
  • গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির শরীরে কোনো রকম আঘাতের চিহ্ন দেখা গেলে, গ্রেপ্তারকারী কর্মকর্তা এধরনের আঘাতের কারণ ও বিবরণ লিপিবদ্ধ করতঃ তাঁকে নিকটতম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করবেন এবং দায়িত্বরত চিকিৎসকের সনদ সংগ্রহ করবেন।
  • গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে তাঁর পছন্দের আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করার কিংবা স্বজন বা নিকটজনের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে হবে।

এছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের নির্দেশিকা “অপরাধ তদন্ত নির্দেশিকা” এর অধ্যায় ৬.৬-এ নারীদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত কিছু বিধান উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, নারীদের গ্রেপ্তারের সময় পুলিশকে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং তদন্তের সময় তাদের সম্মান ও গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।

এমতাবস্থায়, যে কোন পরিস্থিতিতেই যেন গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের ক্ষেত্রে সংবিধান এবং সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের নির্দেশনার লঙ্ঘন না হয় এবং বিচার পাওয়ার অধিকার যেন নিশ্চিত হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।

বার্তা প্রেরক:
কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
ইমেইল: communication@cakhuy.com